টিকটকে পরিচয়, নড়াইল থেকে রাঙামাটির মাদকের আখড়ায় এনে তরুণীকে ধর্ষণ
রাঙামাটি প্রতিনিধি: টিকটকে পরিচয়ের সূত্র ধরে বিয়ের প্রলোভনে কিশোরীকে রাঙামাটিতে ডেকে এনে মাদকের আখড়ায় আটকে রেখে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। খোদ রাঙামাটি শহরের বাস টার্মিনাল সংলগ্ন এলাকায় গত তিন দিন ধরে এই পাশবিক ঘটনাটি ঘটালেও এলাকার স্থানীয় বাসিন্দারা কিছুই বুঝতে পারেননি।১৮ অক্টোবর শনিবার বিকেলে ভিকটিম কিশোরীটি পাশবিক নির্যাতন থেকে বাঁচতে বন্দিঘর থেকে পানিতে লাফ দেয়। এই ঘটনার পর থেকেই অভিযুক্ত মাদক কারবারি সালাউদ্দিন পালিয়ে গেছে।পরবর্তীতে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে কোতয়ালী থানা পুলিশকে খবর দিলে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার সময় ভিকটিম কিশোরীকে থানায় নিয়ে গেছে কোতয়ালী থানা পুলিশ।ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন রাঙামাটি কোতয়ালী থানার ওসি তদন্ত মো. মোখলেছুর রহমান। তিনি বলেন, ঘটনার সাথে জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে শহরের বিভিন্ন স্থানে অভিযান শুরু করেছে পুলিশ। পুলিশ জানায়, নড়াইল জেলা সদরের নারায়ণপুর গ্রামের জনৈক ব্যক্তির ১৫ বছর বয়সী বড় কন্যার সাথে কয়েকমাস আগে টিকটকের মাধ্যমে পরিচয় হয় রাঙামাটির শান্তিনগরের মাদকসেবী সালাউদ্দিনের। তাদের মধ্যে পরিচয় থেকে প্রেম হয়। এই প্রেমের কারণেই রাঙামাটির সালাউদ্দিনের প্রলোভনে পড়ে মেয়েটি নড়াইলে তার বিয়ে হলেও সেই স্বামীর সংসারে যায়নি।গত ১৫ অক্টোবর মেয়েটিকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে রাঙামাটিতে নিয়ে আসে সালাউদ্দিন। মেয়েটিকে রাঙামাটিতে এনে বাসটার্মিনাল সংলগ্ন শান্তি নগরের জনৈক আলমের মালিকানাধীন ভাড়া বাসায় আটকে রাখে।পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ভিকটিম কিশোরী জানায়, আমাকে সালাউদ্দিন ধর্ষণ করেছে। আমাকে রুমে আটকিয়ে রেখে ইয়াবা, গাঁজা সেবন করতো আর আমাকে নির্যাতন করতো। এক পর্যায়ে শনিবার বিকেলে আমি চলে যেতে চাইলে আমার এন্ড্রয়েট মুঠোফোন ও সাথে থাকা ২ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয় সালাউদ্দিন। পরে আমাকে আবারো ধর্ষণ করতে চাইলে আমি বাথরুমে যাওয়ার নাম করে নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়ি। স্থানীয় মানুষজন আমাকে উদ্ধার করে প্রাণে রক্ষা করে।এদিকে সরেজমিনে ঘটনাস্থলে গিয়ে স্থানীয়দের সাথে কথা বললে তারা জানায়, উক্ত ঘটনাস্থলের ঘরটির মালিক জনৈক আলম।কেয়ারটেকার লালু জানায়, মালিকের মেয়ের জামাই ঘরটি দেখাশোনা করে। আমি তার হয়ে ঘরগুলো ভাড়া দিই এবং ভাড়া আদায় করি। শান্তি নগরের মানিক আমার কাছ থেকে গত দুই মাস আগে ঘরটি ভাড়া নেয়। এরপর থেকে এই ঘরে নিয়মিতভাবে মাদকের আসর বসাতো মানিক ও তার সহকর্মী সালাউদ্দিন ও মানিক।মাদক কেনাবেচার জন্য তারা ঘরের মালিকের অনুমতি না নিয়েই নদীর পানির উপর তোলা ঘরটির ভেতরেই কাঠের তক্তা কেটে বিশেষভাবে দরজা তৈরি করে। এই দরজা দিয়ে রাতের আঁধারে মাদকের চালান আনা হতো বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।বিশেষ এই পথ তৈরিতে বাধা দিতে চাইলে কেয়ারটেকার লালুকে মারধরের হুমকি দেওয়া হতো বলেও অভিযোগ করেছেন তিনি।সরেজমিনে উক্ত ঘরটির কবরস্থানের মতো সবগুলো রুম ঘুরে দেখা গেছে অধিকাংশ ঘরেই জুয়া খেলার সরঞ্জাম এবং মানিকের ঘরে ইয়াবা ও গাঁজা খাওয়ার সরঞ্জাম পড়ে থাকতে দেখা গেছে। এছাড়াও উক্ত ঘরে বেল্ট লাগিয়ে রাখা হয়েছে যেগুলো দিয়ে বেঁধে রাখা যায়।প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে সালাউদ্দিন কর্তৃক ধর্ষণের শিকার হয়েছে বলে জানিয়েছে। এই ঘটনায় আইনী পদক্ষেপ চলমান আছে বলে শনিবার রাতে প্রতিবেদককে নিশ্চিত করেছেন কোতয়ালী থানার ওসি তদন্ত মো. মোখলেছুর রহমান।