• ঢাকা
  • |
  • শনিবার ১০ই কার্তিক ১৪৩২ রাত ১১:৩৯:৪২ (25-Oct-2025)
  • - ৩৩° সে:
সংবাদ ছবি

৩ হাজার টাকায় বন্ধুদের কাছে বউ বিক্রি, পালাক্রমে ধর্ষণের অভিযোগে ৫ যুবক আটক

চৌদ্দগ্রাম (কুমিল্লা) প্রতিনিধি : মাত্র তিন হাজার টাকায় বন্ধুদের কাছে কৌশলে নিজ স্ত্রীর সতীত্ব বিক্রি করে দিলেন ইটভাটা শ্রমিক রাজু। তিনদিন ধরে পালাক্রমে ধর্ষণের শিকার হয়ে অভিযুক্ত রাজুর স্ত্রী ভুক্তভোগি নারী তার স্বামী সহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করলে মঙ্গলবার রাতে থানা পুলিশ তাৎক্ষণিক বিশেষ অভিযান চালিয়ে ভুক্তভোগির স্বামীসহ অভিযুক্ত পাঁচজনকে আটক করে।আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ শেষে ২৫ অক্টোব শনিবার বিকালে আদালতের মাধ্যমে তাদেরকে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।চাঞ্চল্যকর এমন ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলা কালিকাপুর ইউনিয়নের মিরশ্বানী এলাকার ইসলামিয়া ব্রিকস ফিল্ডের শ্রমিকদের থাকার ঘরে। এ ঘটনায় আটককৃতরা হলো: ধর্ষিতার স্বামী নোয়াখালী জেলার সুধারাম (সদর) থানার রামহরিতালুক গ্রামের আবুল কাশেমের ছেলে রাজু আহমেদ (২৬), একই এলাকার মৃত সিরাজ মাঝির ছেলে বেলাল হোসেন (৩৫), আবুল কাশেমের ছেলে মো. হৃদয় (২৫), চাঁন মিয়া মাঝির ছেলে মহিন (২৬), একই থানার মুন্সীতালুক গ্রামের শাহ আলমের ছেলে আবুল কালাম (৪৫)।শনিবার সন্ধ্যায় বিষয়টি নিশ্চিত করেন চৌদ্দগ্রাম থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. গুলজার আলম।থানায় দায়েরকৃত এজাহার সূত্রে জানা যায়, প্রধান অভিযুক্ত যুবক রাজুর সাথে তার স্ত্রী বিউটি আক্তার (ছদ্মনাম) এর বিয়ে হয় ২০২৩ সালে। রাজু মাদকসেবী হওয়ায় বিয়ের পর থেকেই তার সাথে স্ত্রী বিউটির বনিবনা হচ্ছিল না। এ কারণে বিউটি বাবার বাড়ি নোয়াখালীর সুধারাম (সদর) থানার মান্দারতলী গ্রামের বাড়িতে চলে যায়। চলতি মাসে শুরুর দিকে উভয় পরিবারের উপস্থিতিতে হওয়া শালিস বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিউটিকে পুনরায় রাজু বাড়ি নিয়ে যায়।গত ১৫ অক্টোবর কুমিল্লা শহরে থাকার কথা বলে রাজুর কর্মস্থল উপজেলার কালিকাপুর ইউনিয়নের মিরশ্বানীর ইসলামিয়া ব্রিকস ফিল্ডে নিয়ে আসে। ওখানে নিয়ে এসে তাকে ব্রিকস ফিল্ড শ্রমিক বেলাল হোসেনের একটি ঘরে থাকার ব্যবস্থা করে দেন।ভুক্তভোগি বিউটি জানান, গত ১৬ অক্টোবর রাত অনুমান ১০টার সময় বেলাল ও আবুল কালাম রুমে প্রবেশ করে আমার স্বামী রাজুর সাথে কিছুক্ষণ আলাপ করে। এরপর কালাম বাইরে চলে যায়। কিছুক্ষণ পর আমার স্বামী আমার মুখ চেপে ধরে এবং বেলাল আমাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। চক্ষু লজ্জায় কাউকে কিছু জানাইনি।এরপর ১৮ অক্টোবর রাতে হৃদয় ও মহিন উদ্দিন নামে আমার স্বামীর দুই বন্ধু আমার রুমে প্রবেশ করলে আবারো আমার স্বামী জোরপূর্বক আমার মুখ চেপে ধরে। এ সময় হৃদয় ও মহিন উদ্দিন আমাকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। একইভাবে ২০ অক্টোবর রাতে হৃদয় আমার স্বামীর উপস্থিতিতে আমাকে জোরপূর্বক ঘুমন্ত অবস্থায় আবার ধর্ষণের চেষ্টা করে।এ সময় আমি শোর-চিৎকার করলে হৃদয় পালিয়ে যায়। পরে আমার স্বামী রাজু আমাকে ধমকি দিয়ে বলে, এ কথা যদি কারো কাছে বলি, তাহলে সে আমাকে মেরে লাশ গুম করে ফেলবে। ভয়ে আমি মুখ না খুললেও ইটভাটায় কাজ করতে আসা আমার নিজ এলাকার এক শ্রমিক ফোন করে আমার পিতাকে জানিয়ে দেয়।খবর শুনে আমার পিতা ঘটনাস্থলে আসে। ঘটনার পর আমার স্বামী আমাকে উপজেলা কাশিনগর ইউনিয়নের রানীর বাজার এলাকার অপর একটি ব্রিকস ফিল্ডে নিয়ে যায় এবং নিজ এলাকার কয়েকজনের উপস্থিতিতে আমার পিতার কাছে হস্তান্তর করে।বিষয়টি নিয়ে শুক্রবার রাতে আমি চৌদ্দগ্রাম থানায় এজাহার দায়ের করি। পুলিশ অভিযান চালিয়ে আমার স্বামীসহ অপর অভিযুক্তদের আটক করে।এ বিষয়ে চৌদ্দগ্রাম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ হিলাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, ভুক্তভোগি নারী কর্তৃক অভিযোগ পেয়ে তাৎক্ষণিক অভিযান চালিয়ে আসামীদের গ্রেফতার করা হয়েছে। শনিবার বিকালে তাদেরকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।